সাতক্ষীরার সদর উপজেলার ধুলিহর, ফিংড়ি, ব্রহ্মরাজপুর, লাবসা, বল্লী, ঝাউডাঙা ইউনিয়নের বিলগুলোতে সদ্য রোপা আমন ও বীজতলা পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। হাজার হাজার মাছের ঘের ও পুকুর ভেসে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিম্ন অঞ্চলের বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে পানি উঠেছে।
সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, পৌরসভার পানি নিষ্কাশন সুষ্ঠু ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকার কারণে জলাবদ্ধতায় নাকাল হচ্ছে বছরের পর বছর।
তিনি আরও জানিয়েছেন, মৌসুমী বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে সাতক্ষীরা শহরের পৌরসভার রসুলপুর, মেহেদিবাগ, মধুমল্লারডাঙ্গী, বকচরা, সরদারপাড়া, পলাশপোল, কামাননগর, কামাননগর, পুরাতন রাজারবাগান, বদ্দিপাড়া কলোনি, ঘুড্ডির ডাঙি, পুরাতন সাতক্ষীরা, কাটিয়া মাঠপাড়া, মাছখোলা, ডায়েরবিল, রথখোলাসহ বিস্তীর্ণ এলাকা। প্লাবিত এলাকার কাঁচা ঘরবাড়ি ধসে পড়েছে।
কলারোয়ার খোরদো এলাকার আইয়ুব হোসেন জানিয়েছেন, বেত্রবতী নদীর উভয় পাশের বিল ও গ্রামগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে।
তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা থেকে শিক্ষক মুজিবর রহমান জানিয়েছেন, কপোতাক্ষ নদের তীরে অবস্থিত বিভিন্ন গ্রাম ও বিল পানিতে প্লাবিত হয়েছে। কাঁচা ঘরবাড়ি ধসে পড়ার উপক্রম হয়েছে। অনেকে বাড়ি ছেড়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।
এসব এলাকার বিলগুলোতে সদ্য রোপা আপন ও বীজ তলার ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া পানের বরজেরও ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আশাশুনি উপজেলার দরগাহপুর এলাকার বাসিন্দা জুলফিকার হায়দার জানিয়েছেন, ভারি বর্ষণে এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট, বাড়িঘর। ভেসে গেছে পুকুর ও মাছের ঘের। উপজেলার প্রতাপনগর, আনুলিয়া, খাজরা, বড়দল, শ্রীউলা, আশাশুনি সদরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল পানিতে থৈ থৈ করছে।
শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা, পদ্মপুকুর, কাশিমাড়ি, বুড়িগোয়ালিনী, কৈখালি, রমজাননগরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। কালিগঞ্জ উপজেলার মৌতলা, মথুরেশপুর, ভাড়াশিমলাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের মাছের ঘের ও পুকুর পানিতে ডুবে গেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী রিপন জানিয়েছেন, নিম্নচাপের প্রভাবে সাতক্ষীরায় ৭৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামী কয়েকদিন এভাবে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরেরর তথ্য কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান জানিয়েছেন, ভারি বর্ষণে জেলার নিম্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে সদ্য রোপা আমন, আউশ বীজ তলিয়ে গেছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের জরিপ করে ক্ষয়-ক্ষতি নিরূপন করে তালিকা পাঠাতে বলা হয়েছে।
তিনি আরও জানিয়েছেন, যদি ভারি বর্ষণ থেমে যায়, তাহলে রোপা আমন ও বীজতলার তেমন ক্ষতি হবে না। তারপরও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা প্রস্তুতি করতে বলা হয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা দুর্যোগ ও ত্রাণ কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল বাছেদ জানিয়েছেন, হঠাৎ ভারী বর্ষণের ফলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া অতি বর্ষণজনিত ক্ষয়-ক্ষতি নিরূপনে কোন নির্দেশনা পাননি তারা।