ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। চলচ্চিত্রের পর্দায় তাকে দেখে প্রেমে পড়েছেন অসংখ্য ভক্ত। তিনিও কিন্তু একজন সাধারণ মানুষের প্রেমে হাবুডুবু খেয়েছেন। সেই মানুষের মন পেতে মাহিকেও কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে।
মাহির সঙ্গে অপুর পরিচয় ২০১২ সালে। বন্ধু আশ্রাবের সঙ্গে সিলেট গিয়েছিলেন মাহি। আশ্রাবের বেস্ট ফ্রেন্ড অপু। অপুর সঙ্গে মাহির প্রথম দেখা হওয়ার পর মনে হয়েছিল- হ্যাংলা-পাতলা আইনস্টাইন টাইপের একটা ছেলে! অনেক বেশি ফর্সা, চশমা পরে। প্রথম দেখায় অপুর প্রেমে পড়েননি মাহি।
একদিন মাহি-অপু-আশ্রাব ঘুরতে বের হন। এই ভ্রমণেই দুজনের প্রেমের সূচনা। মাহি সে-সময় গণমাধ্যমে বলেছিলেন, ‘ভ্রমণের দ্বিতীয় দিন অপুদের চা-বাগানে গাড়ি নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিলাম। অপু গাড়ি চালাচ্ছিল। আমি বরাবরই সিনেমাটিক। খুবই রোমান্টিক। গান শুনলে আনমনা হয়ে যাই। জাফলংয়ের রাস্তায় গাড়ি চলছিল। গাড়িতে বাজছিল ‘ফাগুনের দিন শেষ হবে একদিন’ গানটি। অপুর সামনে লুকিং গ্লাস ছিল। আমার হঠাৎ করেই লুকিং গ্লাসে চোখ পড়ল। ওকে (অপু) দেখেই কেন জানি ভালো লেগে গেল।’
ভালোবাসার প্রস্তাব মাহি দিয়েছিলেন অপুকে। অপু সেই প্রস্তাবে সাড়া দিয়েছেন। যদিও এখানেও রয়েছে গল্প। মাহি সে-সময় আরো বলেছিলেন, ‘আমি তো ওর (অপু) প্রেমে পড়লাম। এরপর শুরু হলো চিন্তা- কীভাবে ওকে প্রপোজ করবো? আমার মোবাইল নম্বর অপু জানতো। আমি বুদ্ধি করে অপরিচিত নম্বর থেকে অপুকে এসএমএস পাঠালাম। লেখা ছিল: ‘আপনাকে আমার খুব ভালো লাগে।’
কিন্তু সেই এসএমএস-এর উত্তর অপু দেননি। যদিও এ জন্য মাহিকে খুব বেশিদিন অপেক্ষা করতে হয়নি। একদিন অপু ফিরতি মেসেজ দিলেন। এরপরই শুরু হলো দু’জনের এসএমএস আদান-প্রদান। তখনও কিন্তু সরাসরি দুজনের কোনো কথা হয়নি। একদিন সেই প্রহরও শেষ হলো। মাহি ‘ইনোসেন্ট অ্যাঞ্জেল’ নামে একটা ইয়াহু মেসেঞ্জারে অ্যাকাউন্ট খোলেন। প্রায় তিন মাস সেখানেই কথা হতো। মাহির ডুয়েল সিমের ফোন ছিল। সেখানে তার আসল নম্বর যেমন ছিল, তেমনি অপুর জন্য যে নম্বরটা ব্যবহার করতেন সেটিও ছিল। একদিন অপু মাহিকে ফোন দিতেই মাহি মুখ ফসকে বলে ফেলেন, ‘ভাইয়া কেমন আছেন?’
মাহি ভেবেছিলেন অপু আসল নম্বরটায় ফোন দিয়েছেন। কিন্তু ওদিকে কণ্ঠ শুনেই অপু বুঝে ফেলেন তিনি কার সঙ্গে কথা বলছেন। এ ঘটনার পর অপু মাহির সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দেন। মাহি সে সময় এ ঘটনার স্মৃতিচারণ করে বলেছিলেন- ‘আমিও নাছোড়বান্দা। তাকে ফোন করতে করতে অবশেষে মোটামুটি বোঝাতে সক্ষম হয়েছিলাম।’
কিন্তু মজার বিষয় হলো বিষয়টি অপু আগেই বুঝতে পেরেছিলেন। অপু তখন বলেছিলেন, ‘আমরা প্রথমে অপরিচিত নম্বরে মেসেঞ্জারে কথা বলতাম। কোনো কারণে আমি জেনে গিয়েছিলাম এটা মাহি। কিন্তু মাহি জানতো না যে, আমি বিষয়টি বুঝে ফেলেছি। যাই হোক, এভাবেই আমাদের প্রেম হয়।’
২০১৬ সালের ২৫ মে মাহমুদ পারভেজ অপুর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন মাহি। সম্প্রতি দুজন বিবাহ বিচ্ছেদের ঘোষণা দিয়েছেন।