কান ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, ফ্রান্সে একটি শাখায় পুরস্কার জিতেছে দেশের সিনেমা ‘বাতিক বাবু’। স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন জিয়াউল হক রাজু। রোববার (২৬ ডিসেম্বর) উৎসব কর্তৃপক্ষ বিজয়ী সিনেমাগুলোর নাম তাদের ফেসবুক পেজে প্রকাশ করেছে।
স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রতিযোগিতার এ আসরে প্রতি মাসে বিভিন্ন দেশ থেকে জমা পড়ে বহু চলচ্চিত্র। সে সবের মধ্যে ‘বাতিক বাবু’ মনোনয়ন পায় বেস্ট নেরেটিভ ফিল্ম, বেস্ট স্টুডেন্ট ফিল্ম ও বেস্ট থ্রিলার-সাসপেন্স ফিল্ম শাখায়।
এর মধ্য থেকে বেস্ট থ্রিলার-সাসপেন্স ফিল্ম বিভাগে বিজয়ী হয়েছে ‘বাতিক বাবু’ সিনেমাটি। প্রতি মাসের সেরা সিনেমা নিয়ে বছর শেষে হবে আরও একটি উৎসব। সেখানেও নির্বাচন করা হবে বিভিন্ন বিভাগের সেরাদের।
এই চলচ্চিত্রে বাতিক বাবু চরিত্রে অভিনয় করেছেন তৌফিকুল ইমন। আরও অভিনয় করেছেন হাসনাত রিপন, দিপু বড়ুয়া, জোহান, বিভাইয়ুন।
তরুণ চলচ্চিত্রকার জিয়াউল হক রাজু বলেন, আমি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট (বিসিটিআই) থেকে চলচ্চিত্র নির্মাণ বিষয়ে ২ বছর ব্যাপ্তি স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা করেছি। এই ‘বাতিক বাবু’ চলচ্চিত্রটি আমার চূড়ান্ত ডিপ্লোমা চলচ্চিত্র। সিনেমার প্রযোজক বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট (বিসিটিআই)। ‘বাতিক বাবু’ গল্পটি সত্যজিৎ রায় স্যার-এর ছোট গল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মিত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যে কাজ করতে হয়। তবুও টিমের সবাই মিলে সিনেমাটি নির্মাণ করার চেষ্টা করেছি। সিনেমাটি যে পুরস্কার জিতবে, তা কখনও ধারণাই করিনি। আজ সকালেই বিষয়টি জানতে পেরেছি। খুব ভালো লাগছে।
নির্মাতার ভাষ্য, এই চলচ্চিত্রটি নির্মাণের পেছনে অনেক গল্প রয়েছে, যা কি না আমাকে প্রতি মুহূর্তে খুব অনুপ্রেরণা দেয়। এই গল্পটি আমি সর্বপ্রথম ৪ বছর আগে আমার এক বন্ধুর মুখে শুনি। অতঃপর আমি সেই সময় থেকেই এই গল্পটিকে নিয়ে চলচ্চিত্র বানানোর কথা ভাবা শুরু করি। সেই সময় আমি আমার ক্যামেরা বিক্রি করে এই গল্পকে সঙ্গে করে নিয়ে গল্পের আসল লোকেশন দার্জেলিং এ চলে যাই এবং সত্যজিৎ রায় স্যারের লেখা গল্পের লোকেশনগুলো দাঁড়িয়ে গল্পটিকে অনুভব করার চেষ্টা করেছিলাম। সেই সময় বিভিন্ন কারণে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করতে পারিনি। এরপর ৪ বছর পর আমার চূড়ান্ত পরীক্ষায় এই চলচ্চিত্রটি বানানোর চিন্তা আবার মাথায় চেপে বসে।
আমার মেন্টর হায়দার রিজভি স্যার এবং অভিজিৎ দাসগুপ্ত স্যারের সহযোগিতায় সন্দীপ রায় স্যারের সঙ্গে যোগাযোগ করে গল্পের অনুমতি নিয়ে চলচ্চিত্রটির নির্মাণ কাজ শুরু করি রাঙামাটিতে। এই চলচ্চিত্রটির নির্মাণ কাজের সঙ্গে যারা জড়িত তারা হলেন- সম্পাদক মোস্তফা প্রকাশ, সিনেমাটোগ্রাফার খালেক সাদমান, প্রোডাকশন ডিজাইনার জুবায়ের হোসাইন, শিল্প নির্দেশক সাগর রশিদ ও প্রদীপ সাহা, লোকেশন সাউন্ড রুদ্র কাউসার, লাইন প্রোডিউসার সাজজাদ মাহমুদ চৌধুরী, সাউন্ড ডিজাইনার অনিক আহমেদ, মিউজিক মেহেদী হাসান তামজীদ, সহকারী পরিচালক বিভাইয়ুন চাকমা এবং লোকেশন সহযোগিতায় দিপু বড়ুয়া, জোহান জন, বিভাইয়ুন চাকমা। এই চলচ্চিত্রের সঙ্গে জড়িত সকলের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।
সম্প্রতি সময়ে অভিনেত্রী রোবেনা রেজা জুঁইকে নিয়ে নির্মাতা জিয়াউল হক রাজু নতুন স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমার শুটিং শেষ করেছেন। সেটি এখন সম্পাদনার টেবিলে আছে। এই সিনেমাটিও দেশি বিদেশি অনেক ফেস্টিভ্যালে অংশগ্রহণ করবে বলে আশা রাখছেন নির্মাতা।