৮০ ওভার শেষ হতেই দ্বিতীয় নতুন বল নিয়েছে পাকিস্তান। আক্রমণে ফিরেছেন শাহিন শাহ আফ্রিদি।
৮০ ওভারে বাংলাদেশ করে ৪ উইকেটে ২৩৯ রান।
শেষ বেলায় নতুন বলে ১০ ওভার কাটিয়ে দেওয়ার চ্যালেঞ্জের শুরুটা ভালো করেছেন লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম। আফ্রিদির ওভার থেকে নিয়েছেন ৭ রান।
দু:সময় পেরিয়ে লিটনের সেঞ্চুরি
টেস্টে ছন্দেই ছিলেন। কিন্তু টি-টোয়েন্টি কেটেছ ভীষণ বাজে। টানা ব্যর্থতার পর জায়গা হারান পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে। টেস্ট ফিরেই পেলেন রানের দেখা। স্রেফ রান নয়, ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি!
এর আগে দুইবার ফিরেছিলেন নব্বইয়ের ঘরে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রামেই ২০০১৮ সালে ৯৪। আর আগেই ইনিংসে হারারেতে ৯৫।
আগে দুইবার ছক্কায় সেঞ্চুরির চেষ্টায় হারিয়েছিলেন সুযোগ। এবার সেই চেষ্টায় যাননি। সময় নিয়েছেন। ডট খেলেছেন। ঠাণ্ডা মাথায় ছুঁয়েছেন তিন অঙ্ক।
৯৫ বলে করেছিলেন ফিফটি, সেঞ্চুরি এসেছে ১৯৯ বলে।
উইকেটশূন্য আরেকটি ঘণ্টা
প্রথম দুই ঘণ্টায় পড়েছিল দুটি করে উইকেট। পরের তিন ঘণ্টায় বাংলাদেশ হারায়নি কোনো উইকেট।
দ্বিতীয় সেশন পুরোটা কাটিয়ে দেওয়ার পর তৃতীয় সেশনের প্রথম ঘন্টাও নিরাপদে কাটিয়ে দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস। ১৫ ওভারে এই দুই ব্যাটসম্যান যোগ করেছেন ৫৫ রান।
একটি ক্যাচ দিয়েছিলেন লিটন। ধরতে পারেননি সাজিদ খান। লিটন আরেকবার বাঁচেন স্লিপে ক্যাচ হতে হতে। তিনি আছেন প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির কাছে। তিন অঙ্ক থেকে খুব বেশি দূর নন মুশফিকও।
লিটন খেলছেন ৯৫ রানে। মুশফিকের রান ৭৩।
৭৪ ওভারে বাংলাদেশের রান ৪ উইকেটে ২২৬।
জুটির দেড়শর পর দলের দুইশ
৪৯ রানে চার উইকেট হারানো বাংলাদেশের রান ছুঁয়েছে দুইশ। মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাসের দেড়শ রানের জুটির সৌজন্যে মাঝে আর কোনো উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ।
৬৮ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৪ উইকেটে ২০০।
আগের ওভারে দেড়শ স্পর্শ করে মুশফিক ও লিটনের জুটির রান। এই মাঠে এটাই পঞ্চম উইকেটে বাংলাদেশের প্রথম দেড়শ রানের জুটি। ২০০৮ সালে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে মুশফিকের সঙ্গেই মেহরাব হোসেনের ১৪৪ ছিল আগের সেরা।
৩০৪ বলে এসেছে মুশফিক ও লিটনের জুটিতে দেড়শ। ২০৭ বলে ছুঁয়েছিল একশ।
জীবন পেলেন লিটন
তৃতীয় সেশনের শুরুতে বাংলাদেশের ওপর চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করছে পাকিস্তান। দ্বিতীয় সেশনের শেষ দিকে যেভাবে রান আসছিল, সেভাবে আসছে না। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সুফল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিল পাকিস্তান। তবে শেষ পর্যন্ত হলো না লিটন দাসের ক্যাচ মিডউইকেটে সাজিদ খান ধরতে না পারায়।
শাহিন শাহ আফ্রিদির অফ স্টাম্পের বাইর পল টেনে পুল করেন লিটন। ঠিক মতো খেলতে পারেননি এই কিপার-ব্যাটসম্যান। সহজ ক্যাচ মুঠোয় জমাতে পারেননি সাজিদ।
সে সময় ৬৭ রানে ছিলেন লিটন। পরের বলে দ্রুত একটি সিঙ্গেল নেওয়ার চেষ্টায় হতে পারতেন রান আউট।
৬৫ ওভারে বাংলাদেশের রান ৪ উইকেটে ১৮৯।
বাংলাদেশের দারুণ সেশন
হতাশার প্রথম সেশন পেরিয়ে মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাসের হাত ধরে দারুণ এক সেশন কাটিয়েছে বাংলাদেশ। চা-বিরতিতে যাওয়ার সময় স্বাগতিকদের স্কোর ৪ উইকেটে ১৭১।
লিটন ১৩৬ বলে ৬২ রানে খেলছেন। ১২২ বল খেলে মুশফিকের রান ৫৫। তাদের জুটিতে এখন পর্যন্ত এসেছে ১২২ রান।
দ্বিতীয় সেশনে কোনো উইকেট না হারিয়ে বাংলাদেশ ৩১ ওভারে যোগ করেছে ১০২ রান। প্রথম সেশনে ২৮ ওভারে এসেছিল কেবল ৬৯ রান।
দুয়েকটা বল বাদ দিয়ে প্রায় নিখুঁত ব্যাটিং করছেন লিটন। টেস্টে তার ক্যারিয়ারের সেরা বছরটা হচ্ছে আরও সমৃদ্ধ। নিচ্ছেন না কোনো অহেতুক ঝুঁকি। বানিয়ে খেলার কোনো চেষ্টা দেখা যাচ্ছে না। ক্রিজ ব্যবহার করছেন দারুণভাবে।
মুমিনুল হকের পরপরই নাজমুল হোসেন শান্ত ফিরে না গেলে হয়তো ছয়ে নামা হতো না লিটনের। অভিষেক ম্যাচ বলে হয়তো অমন চাপের মধ্যে ইয়াসির আলিকে পাঠায়নি বাংলাদেশ।
কঠিন সময়ে নেমে লিটন খেলছেন আস্থার সঙ্গে। নজরকাড়া কিছু শট উপহার দিয়েছেন এই কিপার-ব্যাটসম্যান।
মুশফিক সময় নিয়েছেন শুরুতে। তবে মোটেও নড়বড়ে ছিলেন না। স্রেফ বলের পর বল ঠেকিয়ে যাচ্ছিলেন। বল খেলার ফিফটি হয়ে যাওয়ার পর বাড়িয়েছেন রানের গতি।
মূল বোলারদের ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে আক্রমণে আনছেন বাবর আজন। কিন্তু কেউই খুব একটা ভাবাতে পারছেন না ব্যাটসম্যানদের।
লিটনের পর মুশফিকের ফিফটি
প্রথম সেশনে চার উইকেট হারিয়ে বাজে শুরু করা বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াচ্ছে মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাসের ব্যাটে। লিটন ফিফটি করার পর জুটির রান ছুঁয়েছে একশ। এবার হাসান আলিকে পরপর দুটি চার মেরে ফিফটিতে গেলেন মুশফিকও।
প্রথম ৫১ বলে করেছিলেন কেবল ৬। এরপর ধীরে ধীরে ফিরেন সহজাত ক্রিকেটে। খেলতে শুরু করেন শট। পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন ১০৮ বলে। অনেকটা বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই তুলছেন রান।
পঞ্চাশের পথে তার ব্যাট থেকে এসেছে আটটি চার।
৫৩ ওভারে বাংলাদেশের রান ৪ উইকেটে ১৬০।
মুশফিক-লিটনের শতরানের জুটি
মুশফিকুর রহিমের চারে জুটির রান ছুঁয়েছিল পঞ্চাশ, লিটন দাসের চারে স্পর্শ করল একশ। ১৩৪ বলে ফিফটি হওয়া জুটি সেঞ্চুরিতে গেল ২০৭ বলে। পরের পঞ্চাশ এলো ৭৩ বলে।
বাংলাদেশের প্রতিরোধ গড়া এই জুটিতে লিটনের অবদান ৫৬, মুশফিকের ৪১। তারা জুটি বাঁধার সময় দ্রুত চার উইকেট হারিয়ে কাঁপছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে এখন দল অনেকটাই ভালো ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে।
৫১ ওভারে বাংলাদেশের রান ৪ উইকেটে ১৫১।
আস্থায় খেলে লিটনের ফিফটি
টি-টোয়েন্টির ভোগান্তি প্রভাব ফেলেনি লিটন দাসের আত্মবিশ্বাসে। টেস্টে বছর যেমন কাটাচ্ছিলেন, খেলছেন সেভাবেই। দারুণ আস্থায় নুমান আলিকে চার মেরে স্পর্শ করেছেন ফিফটি, ৯৫ বলে।
সবশেষ ১১ ইনিংসে এটি লিটনের ষষ্ঠ ফিফটি। ক্যারিয়ারের দশম।
পঞ্চাশ স্পর্শ করার পথে ছয়টি চারের সঙ্গে মেরেছেন একটি ছক্কা। বেরিয়ে অফ স্পিনার সাজিদ খানকে ওড়িয়েছিলেন ছক্কায়।
৪৯ ওভারে বাংলাদেশের রান ৪ উইকেটে ১৪৩। লিটন ৫০ ও মুশফিকুর রহিম ৪০ রানে ব্যাট করছেন।
একটুর জন্য মুশফিকের রক্ষা
সাজিদ খানের একটু বাড়তি লাফানো বল ডেকে এনেছিল বিপদ। একটু পেছনে থেকে ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। খুব একটা নিয়ন্ত্রণ ছিল না। তার ভাগ্যভালো একটুর জন্য বলের নাগাল পাননি শর্ট লেগের ফিল্ডার।
ক্যাচ হতে হতে বেঁচে যাওয়ার সময় ৩৯ রানে ছিলেন মুশফিক।
উইকেটশূন্য ঘণ্টা
প্রথম সেশনে প্রতি ঘণ্টায় দুটি করে উইকেট হারিয়েছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় সেশনের প্রথম ঘণ্টা পার করে দিয়েছে কোনো উইকেট ছাড়াই।
জমে উঠেছে মুশফিকুর রহমান ও লিটন দাসের জুটি। পঞ্চাশ ছুঁয়ে তাদের পঞ্চম উইকেট জুটি এগিয়ে যাচ্ছে আরও দূরে।
দ্বিতীয় সেশনের পানি পানের বিরতির সময় বাংলাদেশের স্কোর ৪৩ ওভারে ১২০/৪। মুশফিক ৩৪ ও লিটন ৩৩ রানে ব্যাট করছেন।
লাঞ্চের পর প্রথম ঘণ্টায় ১৫ ওভারে রান এসেছে ৫১।
মুশফিক-লিটনের জুটিতে পঞ্চাশ
দ্রুত চার উইকেট হারানো বাংলাদেশকে টানছেন মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস। অবিচ্ছিন্ন পঞ্চম উইকেটে দুই জনে গড়েছেন পঞ্চাশ রানের জুটি।
টি-টোয়েন্টিতে বাজ সময় কাটছিল দুই জনেরই। পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজে বাদই পড়েন লিটন। মুশফিককে দেওয়া হয় বিশ্রাম, যেটি তিনি নিজে দেখছেন বাদ হিসেবে। এই দুই জন দলের বিপদে ধরেছেন হাল।
টেস্টে দারুণ সময় কাটছে লিটনের। সবশেষ ইনিংসেই করেন ৯৫ রান। পাকিস্তানের স্পিন ও পেস সবই সামাল দিচ্ছেন দারুণ দক্ষতায়। পায়ের ব্যবহার দারুণ, ক্রিজের গভীরে গিয়ে খেলছেন নুমান আলির বাঁহাতি স্পিন। শুরু থেকেই সাবলীল লিটন।
মুশফিক নিয়েছেন সময়। প্রথম ৫১ বলে করেন কেবল ৬। ফাহিম আশরাফকে চার মেরে ডানা মেলেন। এরপর থেকে খেলছেন সহজাত ক্রিকেট।
শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে মুশফিকের চারে একশ স্পর্শ করে বাংলাদেশের রান। সঙ্গে ১৩৪ বলে পঞ্চাশে যায় তাদের জুটির রান।
৩৯ ওভারে বাংলাদেশের রান ৪ উইকেটে ১০২। লিটন ২৯ ও মুশফিক ২০ রানে খেলছেন।
বাংলাদেশের হতাশার সেশন
সাইফ হাসানই কেবল আউট হয়েছেন ভালো একটি ডেলিভারিতে। বাকি তিনটি উইকেটই এড়ানো যেত। ব্যাটসম্যানরা তা করতে পারলেন না বলে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম সেশন হলো বাংলাদেশের জন্য ভীষণ হতাশার।
জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে প্রথম সেশন একটু সহায়তা ছিল বোলারদেরও। পেসাররা একটু বাড়তি বাউন্স পেয়েছেন। স্পিনারা কিছুটা টার্ন পেয়েছেন। তাদের দুয়েকটা বল নিচুও হয়েছে।
তবে সাইফকে চমকে দেওয়া শাহিন শাহ আফ্রিদির বাউন্সার ছাড়া অস্বস্তি জাগানো ডেলিভারি খুব বেশি হয়নি। সাদমান ইসলাম ফিরেন এলবডিব্লউ হয়ে। বলের লাইনে যেতে পারেননি তিনি, জায়গা থেকেও খুব একটা নড়েননি। এর আগেও হাসান আলির এমন এক ডেলিভারি ঠিক এভাবেই খেলেছিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। পাকিস্তান রিভিউ না নেওয়ায় এলবিডব্লিউ হননি। সেই ভুল থেকে শিখেননি সাদমান।
অফ স্টাম্পের বাইরে পড়ে আরও বেরিয়ে যাওয়া বল তাড়ার কোনো দরকার ছিল না মুমিনুল হকের। অফ স্টাম্পের বাইরে আপাত সাদামাটা এক ডেলিভারিতে ক্যাচ দেন নাজমুল হোসেন শান্ত। যেটি অনায়াসে ছেড়ে দিতে পারতেন। ঠিক মতো খেললে হতে পারত বাউন্ডারিও।
দুই ঘণ্টায় দুটি করে উইকেট হারানো বাংলাদেশ শেষ ৭০ বলে হারায়নি কোনো উইকেট। মুশিফকুর রহিম ও লিটন দাস খেলছেন আস্থায়।
মধ্যাহ্ন-বিরতিতে যাওয়ার সময় বাংলাদেশের স্কোর ৪ উইকেটে ৬৯ রান। লিটন ৩২ বলে খেলছেন ১১ রানে, ৪০ বলে মুশফিকের রান ৫।
এই মাঠে তৃতীয়বারের মতো প্রথম দিনের প্রথম সেশনে চার উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। আগের দু্ইবার অস্ট্রলিয়া ও পাকিস্তানের বিপক্ষে হেরেছিল তারা।
উইকেট ছুঁড়ে এলেন শান্ত
আগের তিন টেস্টে দুই সেঞ্চুরি। এদিনও খেলছিলেন আস্থায়। কিন্তু নিজের ইনিংস বড় করতে পারলেন না নাজমুল হোসেন শান্ত। অধিনায়কের বিদায়ের পরের ওভারে ফিরে গেলেন বাঁহাতি এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান।
অনায়াসে বল ছেড়ে দিতে পারতেন শান্ত। যত সময় ও জায়গা পেয়েছিলেন মারতে পারতেন বাউন্ডারিও। ফাহিম আশরাফের অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট বল খেলেন পয়েন্ট দিয়ে। না পারেন গ্যাপে পাঠাতে, না মাটিতে রাখতে। ঝাঁপিয়ে ক্যাচ মুঠোয় জমান সাজিদ খান।
৩৭ বলে ২ চারে ১৪ রান করেন শান্ত। টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানই আউট হলেন এই একই রানে।
মুমিনুলের দ্রুত বিদায়
অফ স্পিনার সাজিদ খান বেশ ভোগাচ্ছিলেন মুমিনুল হককে। বাংলাদেশ অধিনায়ক ফিরে গেলেন তার বলেই কট বিহাইন্ড হয়ে।
সাজিদের প্রথম ওভারে মুমিনুলের বিপক্ষে এলবিডব্লিউর রিভিউ নিয়ে ব্যর্থ হয় পাকিস্তান। অফ স্পিনারের পরের ওভার মেডেন খেলেন মুমিনুল। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান পরের ওভারের প্রথম বলেই ধরা পড়েন কিপারের গ্লাভসে।
অফ স্টাম্পের বাইরের বল বেরিয়ে যাচ্ছিল আরও। না খেলে অনায়াসে ছেড়ে দিতে পারতেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তা না করে অহেতুক পা বাড়িয়ে ডিফেন্স করার চেষ্টা করেন। ঠিক মতো পারেননি, ব্যাটের কানায় লেগে যায় মোহাম্মদ রিজওয়ানের গ্লাভসে।
আম্পায়ার আউট না দিলে রিভিউ নিয়ে সফল হয় পাকিস্তান। ১৯ বলে ৪ রান করে ফিরে যান মুমিনুল।
১৬ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৩ উইকেটে ৪৯। ক্রিজে নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গী লিটন দাস।
প্রথম ঘণ্টায় দুই ওপেনারের উইকেট
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই দুই ওপেনারকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। শাহিন শাহ আফ্রিদির দারুণ এক বাউন্সারে ফিরেছেন সাইফ হাসান। বাঁহাতি ওপেনার সাদমান ইসলাম বিদায় নিয়েছেন হাসান আলির বলে এলবিডব্লিউ হয়ে।
আগের তিন টেস্টে দুটি সেঞ্চুরি করা নাজমুল হোসেন শান্ত খেলছেন আস্থার সঙ্গে। তার সঙ্গে ইনিংস মেরামতের কাজে যোগ দিয়েছেন অধিনায়ক মুমিনুল হক।
প্রথম ঘণ্টায় চার বোলারকে দিয়ে বোলিং করিয়েছেন পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম। খারাপ করেননি কেউই।
১৪ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ২ উইকেটে ৪৩।
পাকিস্তানের ব্যর্থ রিভিউ
দ্বাদশ ওভারে প্রথম কোনো স্পিনারকে আক্রমণে আনেন বাবর আজম। সাজিদ খানের প্রথম বলেই এলবিডব্লিউর জোরালো আবেদন করে পাকিস্তান। আম্পায়ার সাড়া না দিলে শেষ সেকেন্ডে রিভিউ নেন পাকিস্তান অধিনায়ক। তাতে কাজ হয়নি, উল্টো একটি রিভিউ হারায় সফরকারীরা।
অফ স্পিনারের স্টাম্পে পড়ে ভেতরে ঢোকা বল ব্যাটে খেলতে পারেননি মুমিনুল হক। বাংলাদেশ অধিনায়কের ব্যাট এড়িয়ে বল লাগে প্যাডে। পরে বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা গেছে বল যেত লেগ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে।
সে সময় শূন্য রানে ছিলেন বাঁহাতি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান মুমিনুল।
১২ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ২ উইকেটে ৪০। নাজমুল হোসেন শান্ত খেলছেন ৯ রানে। মুমিনুলের রান ৩।
টিকলেন না সাদমানও
ফিরে যেতে পারতেন প্রথম ওভারে, শূন্য রানে। শাহিন শাহ আফ্রিদির বল যে সাদমান ইসলামের ব্যাট ছুঁয়ে গেছে টেরই পাননি পাকিস্তান দলের কেউ! আবেদন করেননি কেউ। চতুর্থ ওভারে হাসান আলির বলে ছিলেন এলবিডব্লিউ। পাকিস্তান রিভিউ নিলেই ফিরে যেতে হতো ৫ রানে। তবে এরপরও ইনিংস বড় করতে পারেননি বাঁহাতি এই ওপেনার। হাসানের বলেই ফিরলেন এলবিডব্লিউ হয়ে।
অষ্টম ওভারের সেটি ছিল শেষ বল। অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বল অনেকটা সুইং করে, সাদমানের ব্যাট এড়িয়ে ছোবল দেয় প্যাডে। আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দিলে রিভিউ নেন তিনি। কাজ হয়নি, উল্টো এই ওপেনারের সঙ্গে একটি রিভিউ হারায় বাংলাদেশ।
২৮ বলে তিন চারে ১৪ রান করেন সাদমান। ক্রিজে নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গী মুমিনুল হক।
বাউন্সারে শেষ সাইফ
টি-টোয়েন্টিতে ভীষণ হতাশ করা সাইফ হাসান টেস্টে শুরুটা ভালোই করেছিলেন। দ্বিতীয় ওভারে হাসান আলিকে মেরেছিলেন দুটি চার। পঞ্চম ওভারে শাহিন শাহ আফ্রিদিকে মেরেছিলেন আরেকটি। তবে ওই চারের পরের বলেই ফিরে যান শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়ে।
আফ্রিদির বাউন্সার অতটা ওঠবে ভাবেননি সাইফ। তাকে চমকে দিয়ে বল অনেকটা লাফিয়ে ছোবল দিচ্ছিল হেলমেটের গ্রিলে। তড়িঘড়ি করে কোনোমতে মুখ বাঁচাতে যান সাইফ। ঠিক মতো খেলতে পারেননি। ক্যাচ যায় শর্ট লেগে আবিদ আলির হাতে।
তিন চারে ১২ বলে ১৪ রান করেন সাইফ। ভাঙ্গে ১৯ রানের উদ্বোধনী জুটি।
ক্রিজে গিয়ে দ্বিতীয় বলেই চার মারেন নাজমুল হোসন শান্ত।
৫ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ১ উইকেটে ২৩। শান্ত খেলছেন ৪ রানে। সাদমান ইসলামের রান ৫।
ইয়াসির পেলেন প্রাপ্য সুযোগ
তিন সংস্করণেই জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন। কিন্তু কোনোটিতেই খেলার সুযোগ মিলছিল না। তিনি থাকার পরও হুট করে ডাক পেয়ে অনেকে খেলে ফেলেছেন ম্যাচ। কিন্তু তার অপেক্ষা কেবলই বাড়ছিল। সবশেষ পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজেও ছিলেন বেঞ্চেই। অবশেষে প্রাপ্য সুযোগ পেলেন ইয়াসির আলি চৌধুরি।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৫৭ ম্যাচ খেলার পর অভিষেক হলো ইয়াসিরের। টেস্ট টুপি পেলেন অধিনায়ক মুমিনুলের হাত থেকে।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ইয়াসিরের রেকর্ড দারুণ। ৫৭ ম্যাচে ৫০.৩৭ গড়ে ৩ হাজার ৯৮০ রান। ৯ সেঞ্চুরির পাশে ২৪ ফিফটি। সর্বোচ্চ ১৬৫।
টেস্টে বিভিন্ন সময় বদলি ফিল্ডার হিসেবে মাঠে নামার অভিজ্ঞতা আছে তার। এরই মধ্যে নিয়েছেন ৬টি ক্যাচ।
পাকিস্তান দলে নেই ইমাম
আগের দিনই ১২ জনের দল ঘোষণা করে দিয়েছিল পাকিস্তান। সেখান থেক বাদ পড়েছেন কেবল ইমাম-উল-হক। আবিদ আলির সঙ্গে ইনিংস উদ্বোধন করবেন আব্দুল্লাহ শফিক।
বাবর আজম (অধিনায়ক), মোহাম্মদ রিজওয়ান (সহ-অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক), আবদুল্লাহ শফিক, আবিদ আলি, আজহার আলি, ফাহিম আশরাফ, ফাওয়াদ আলম, হাসান আলি, নুমান আলি, সাজিদ খান এবং শাহিন শাহ আফ্রিদি।
ইয়াসিরের অভিষেক
দলের সঙ্গে আছেন দীর্ঘদিন ধরে। ঘরোয়া ক্রিকেটে করছেন প্রচুর রান। কিন্তু জাতীয় দলের হয়ে খেলার সুযোগ হচ্ছিল না। তিন সংস্করণেই দলের সঙ্গে থাকার অভিজ্ঞতা হয়ে যাওয়া ইয়াসির আলি চৌধুরি অবশেষে পেলেন সামর্থ্য দেখানোর সুযোগ। ঘরের মাঠে অভিষেক হচ্ছে চট্টগ্রামের এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানের।
হুট করে টি-টোয়েন্টি দলে সুযোগ পেয়ে ভালো করতে না পারা সাইফ হাসানের টেস্টে খেলা নিয়ে শঙ্কা জেগেছিল। তবে শেষ পর্যন্ত টিকে গেছেন তিনি। মাহমুদুল হাসানের জায়গা হয়নি একাদশে।
দুই পেসার ও দুই স্পিনার নিয়ে খেলছে বাংলাদেশ। স্পিনে তাইজুল ইসলামের সঙ্গী মেহেদি হাসান মিরাজ। পেস বোলিংয়ে আবু জায়েদ চৌধুরির সঙ্গী ইবাদত হোসেন।
বাংলাদেশ টেস্ট দল: মুমিনুল হক (অধিনায়ক), সাদমান ইসলাম, সাইফ হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম, লিটন কুমার দাস (উইকেটরক্ষক), মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, ইয়াসির আলি চৌধুরি, আবু জায়েদ চৌধুরি, ইবাদত হোসেন।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
বাংলাদেশ সফরে টানা চার ম্যাচে টস হারলেন বাবর আজম। টি-টোয়েন্টি তিন ম্যাচে টসে হারলেও সিরিজ জেতেন ৩-০ ব্যবধানে। প্রথম টেস্ট টস জিতে অনুমিতভাবে মুমিনুল হক নিলেন ব্যাটিং। বাবর আজম জানিয়েছেন টস জিতলে তিনিও ব্যাটিং নিতেন।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে পথ চলা শুরু
ট-টোয়েন্টি সিরিজ শেষে দুই মেরুতে থাকা এমন দুটি দল এবার মুখোমুখি হচ্ছে ক্রিকেটের সবচেয়ে অভিজাত সংস্করণের লড়াইয়ে। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্রে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশের পথচলা। পাকিস্তানের যা এই চক্রের দ্বিতীয় সিরিজ। চট্টগ্রামে খেলা শুরু সকাল ১০টায়।
নিজেদের সবশেষ টেস্টে দুই দলেরই প্রাপ্তি ছিল দারুণ জয়। অগাস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে প্রথম টেস্ট হারার পর দ্বিতীয় টেস্টে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়ায় পাকিস্তান। বাংলাদেশের জয়টি ছিল জুলাইয়ে জিম্বাবুয়ে সফরে। তবে প্রতিপক্ষ তুলনামূলক দুর্বল হলেও খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়ানো জয়টি ছিল স্মরণীয়।
টি-টোয়েন্ট বিশ্বকাপে ভরাডুবির পর দেশের মাটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশড। সব মিলিয়ে ওই সংস্করণে বাজে সময় কাটানো বাংলাদেশের জন্য স্বস্তি হয়ে এসেছে সংস্করণে বদল। পয়মন্ত চট্টগ্রামে নতুন শুরুর দিকে তাকিয়ে তারা।